নিজস্ব প্রতিবেদক, লন্ডন থেকে : লন্ডনে বসবাসরত এক প্রবাসী বাংলাদেশী রাজা বাবু(৪৫) কর্তৃক নিজ মেয়েকে ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উচ্চ শিক্ষার আশ্বাস দিয়ে গত বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে বসবাস করা নিজের স্ত্রীকে রাজি করিয়ে মেয়েকে লন্ডনে নিয়ে যায় বাবা। কিছুদিন যেতে না যেতে উঠতি বয়সের নিজ মেয়ে ডাকনাম শিখা রায় (২২) শরীরের উপর খারাপ নজর পড়ে বাবার। এরপরই ঘটে নিজ বাবা কর্তৃক মেয়ের উপর নানা যৌন নির্যাতন।
জানা গেছে, ধর্ষক রাজা বাবু পেশায় একজন নরসুন্দর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লন্ডনে এ পেশার থেকে যুক্ত থেকে সেলুন দোকান দিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছেন।
নির্যাতিত মেয়ে শিখা জানায়, প্রতি রাতে তার উপর নেমে আসতো পাষণ্ড বাবার যৌন নির্যাতনের খড়গ। রাতের বেলায় ঘুমের মধ্যে নানা অজুহাতে বুকের মধ্যে হঠাৎ করে হাত ঢুকিয়ে দিতো তার বাবা এবং খুব ব্যথা দিয়ে জোরে জোরে স্তন মৈথুন করত। বুকের মধ্যে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতো যাতে করে নাড়াছাড়া করতে না পেরে ছোট ভাইয়ের ঘুম না ভাঙ্গাতে পারে। মাঝে মাঝে ঠোট কামড়িয়ে চুষতে থাকতো ধর্ষক রাজা বাবু। এমনভাবে ধরে রাখতো যাতে চিৎকার করে শব্দ করতে না পারা যায়। বিশেষ করে রাজা বাবুর ছোট ছেলে যখন ঘুমিয়ে পড়তো কিংবা ওয়াশরুমে যেত ঠিক সে সময়ে নরপশু ঝাপিয়ে পড়তো অসহায় মেয়ের উপর এবং তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করত। মেয়ে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর চাপ প্রয়োগ করে প্রতিশোধস্বরুপ ঘরের ফ্লোর মোছা থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, কাপড় কাঁচা পর্যন্ত সকল ধরনের কাজ করাতো। ওয়াশিং মেশিন থাকা স্বত্ত্বেও হাতে কাপড় কাঁচাতেন পাষণ্ড বাবা। যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অপারগতা প্রকাশে শাস্তি স্বরুপ এ রকম শারীরিক নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হননি ধর্ষক রাজা বাবু।
নির্যাতিত মেয়ে ধর্ষক রাজা বাবু সম্পর্কে আরো জানায়, ভবিষ্যতে যদি স্বামীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে কোন বাঁধা না থাকে, তাহলে তাকে কেন এখন সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না এ বলে নানা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার সাথে যৌন নির্যাতন করত নিজ বাবা। হাজার আকুতিতেও বাবার লালসা থেকে রেহাই পায়নি হতভাগ্য মেয়েটি। বার বার এরকম অস্বীকৃতি জানালে গলা টিপে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। এমনকি বুকের উপর বসে তাকে অনেকবার মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
নিজ বাবা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নির্যাতিত মেয়ে জানায়, তাকে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে জোর করে নানা অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে তাকে অনুরুপ সে রকম নোংরা কাজ করতে বাধ্য করতো। এমনকি তাকে এসকল অপকর্মের কথা কাউকে বলে দিলে বাংলাদেশে বসবাস করা গ্রামে তার মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চুপ করে রাখতো। স্থানীয় অধ্যুষিত কোন বাঙ্গালি নির্যাতিত মেয়ের মুখে কামড়ের দাগ কিংবা ঠোটে দাগ দেখলে বিভিন্ন রকম জ্বর ফোড়া বলতে শিখিয়ে দিতো ধর্ষক রাজা বাবু।
এছাড়া নির্যাতিত মেয়ের মামির সাথে ভিডিও কলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন এবং টাকা পাঠিয়ে তার সাথে মেয়ের সামনে ফোনসেক্স করত ধর্ষক রাজা বাবু। গ্রামে নিজের স্ত্রীকে টাকা না পাঠিয়ে বিভিন্ন মহিলা এবং কর্ল গার্লদের পিছনে ব্যবসায়ের পুরো টাকা ঢালতো রাজা বাবু। এসব কিছু নির্যাতিতা মেয়ে জেনে গেলে তার উপর নেমে আসে আরো অকল্পনীয় শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন।
এক পর্যায়ে বাবার এমন বর্বোরচিত আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে ঘর থেকে পালিয়ে পুলিশের আশ্রয় নেন নির্যাতিতা মেয়ে। পুলিশ বাবাকে থানায় ডাকলে মেয়েকে ইশারায় বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান ধর্ষক রাজা বাবু। এতে হতভাগ্য মেয়ে গ্রামে মাকে মেরে ফেলার কথা চিন্তা করে পুলিশের কাছে বাবার দ্বারা নিজের ধর্ষনের অভিযোগটি গোপন করেন এবং বাবার সাথে নিরাপদ নয় বলে পুলিশের থেকে সরকারি বাসস্থানের সাহায্য নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার চাঁদপুর উপজেলার জগতপুরের শীলবাড়ির পিতা গৌরাঙ্গ রায় এবং মাতা সাধনা রায়ের সন্তান ধর্ষক রাজা বাবু। লন্ডনে তার ১ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। নির্যাতিত মেয়ের বয়স ২২ বছর এবং ছেলের বয়স ১৯। দুজনকেই পারিবারিক ভিসায় গত বছরে একেক করে লন্ডনে নেন রাজা বাবু। তবে রাজা বাবুর এসব কর্মকাণ্ড শুনে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তার শাস্তির দাবি করেছেন। একইসাথে মেয়েকে নিরাপদে রাখতে স্থানীয় বাঙ্গালি কমিউনিটির নেতাদের প্রতি আইনি সহয়াতা করতে অনুরোধ করেছেন নির্যাতিতার মা।